প্রয়োজনীয় এবং যথেষ্ঠ ব্যায়াম আপনাকে দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবন দান করতে পারে। দেহকে সুঠাম এবং কর্মক্ষম রাখতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করাকে নিশ্চিত করতে হবে। এটি আপনার মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখবে এবং কিছুদিন বেশি বেঁচে থাকতে সাহায্য করবে।
গবেষকরা এক গবেষণায় দেখেছেন যে, যেসব কর্মক্ষম ও স্বাস্থ্যবান বয়স্করা সুঠাম পেশীর অধিকারী তাদের বয়স দশ বছর কম মনে হয়।
আপনি যদি দ্রুত সাঁতার কাটেন অথবা দৌড়ান, এমনকি একটু হাঁটাও আপনার জন্য বেশ উপকারী ব্যায়াম হতে পারে। যেকোনো একটি ব্যায়াম বেছে নিলেই আপনি আগের চেয়ে সুস্থ ও সুঠাম হয়ে উঠবেন।
তবে যেখানে সামান্য পরিমান ব্যায়াম আপনার জন্য অনেক বেশি উপকারি, সেখানে যথেষ্ঠ ব্যায়ামের ফলে আরো বেশি উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডা. মাইকেল জয়নার, যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা রাজ্যের মায়ো ক্লিনিকের গবেষক এবং মানুষের কর্মক্ষমতা ও ফিটনেস নিয়ে পৃথিবীর সেরা গবেষণাকারীদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
ডা. মাইকেল বিজনেস ইনসাইডারকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, ‘আপনি যদি আপনার দেহকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে বদ্ধ পরিকর হন, তবে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যায়াম আপনাকে বার্ধক্য জনিত রোগ এবং দেহের সকল ক্ষয়
থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। তবে ব্যায়াম দুইটি সহজ নয়: ‘বারপিস’ এবং ‘দড়ি লাফ’।
‘বারপিস’ এবং ‘দড়ি লাফ’ ব্যায়ামের গুরুত্ব
এটা স্বাভাবিক যে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আপনার দেহের সক্ষমতা কমতে থাকবে। বেশিরভাগ মানুষ ২৫ বছর বয়সে সবচেয়ে সক্ষম ও কর্মক্ষম থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ম্যারাথন দৌড়বিদরা ২৮ বছরে সবচেয়ে দ্রুত দৌড়ানোর সক্ষমতা রাখেন, তবে এটাও ঠিক যে ব্যক্তিভেদে এই সামর্থ্য এবং সক্ষমতা নির্ভর করে।
যদি আপনি ২৫ এর পরে দেহের প্রতি নজর দেন এবং দেহের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে বিশেষ ও প্রয়োজনীয় ব্যায়ামগুলো শুরু করেন তবে আরো দেরীতে সর্বোচ্চ সক্ষমতায় পৌঁছাবেন।
আপনি যদি সত্যিই সুস্থ এবং কর্মক্ষম থাকতে চান তবে অবশ্যই দেহের স্বাভাবিক ক্ষয় ঠেকাতে শক্তি এবং সক্ষমতা বাড়াতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
দেহের সক্ষমতা বাড়াতে সচেষ্ট থাকলেই সম্ভবত আপনি আরো দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনের অধিকারী হবেন।
ডা. মাইকেল আউটসাইড ম্যগাজিনের জন্যে লিখেছিলেন, ‘গবেষণার পর গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, শারীরিক সক্ষমতাকে টেস্ট করে যেকোনো মানুষের মৃত্যুর দিন-ক্ষণ প্রায় নিখুঁতভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করা যায়।’
ধৈর্য আর অধ্যাবসায় থাকলে যেকোনো বয়সেই আপনি দেহের সর্বোচ্চ সক্ষমতা অর্জন করতে পারবেন। ভারোত্তলন এবং ধৈর্যের সঙ্গে ‘ওয়ার্ম আপ সহ’ অনেক ভাবেই দেহের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
তবে ‘বারপিস’ এবং ‘দড়ি লাফ’ ব্যায়াম, দেহের সক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আপনার ধৈর্য এবং সহনশীলতাও বৃদ্ধি করবে। ডা. মাইকেল বলেন, ‘একঘেয়েমী এড়াতে আমি মাঝে মাঝেই এক মিনিট দড়ি লাফ এবং এক মিনিট বারপিস অদল বদল করে করি।’
যেভাবে করবেন
প্রশিক্ষকরা ‘বারপিস’ করার পরামর্শ দিতেই বেশি পছন্দ করেন, কারণ এই একটা ব্যায়াম দিয়েই পুরো দেহকে সচল করা সম্ভব এবং এতে ভুল করার সম্ভাবনা কম থাকে।
ইনস্টাগ্রামের খ্যাতনামা ফিটনেস প্রশিক্ষক কেইলা ইসিনেস সম্প্রতি পুশ আপ বারপিসের ক্ষেত্রে বলেন, “পুরো দেহের সচলতার জন্য যেকোনো একটি ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন তবে আপনি যদি দেহের পরিবর্তনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকেন তবে বিখ্যাত প্রশিক্ষক ববি ম্যক্সিমাজের ‘প্রিজন বারপি’ বেছে নিতে পারেন যা আপনার দেহকে বিশেষভাবে গড়ে তুলবে।”
কিন্তু আপনি সঠিক কৌশলে ধীরে ধীরে বারপিসের মাত্রা বাড়াতে পারছেন কি না তা বোঝাটা গুরুত্বপূর্ণ।